• E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:০৬ পূর্বাহ্ন

×

রূপসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-২০২৪ ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মিললেও শক্ত অবস্থানে ফেরদৌস ও হাবিব

  • প্রকাশিত সময় : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
  • ৪১৪ পড়েছেন

শাহরিয়ার মানিক, রূপসা প্রতিনিধিঃ
আসন্ন রূপসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে মাঠ ঘাট চষে বেড়াচ্ছেন, দিচ্ছেন নানান রকম উন্নয়নমূলক প্রতিশ্রæতি। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের মধ্যেই চলছে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনের মাঠ বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কৃষক, শ্রমিক, প্রবীণ-নবীন সকল শ্রেণী পেশার মানুষ চায়ের দোকানে নির্বাচনী আলোচনায় ঝড় তুলছেন। প্রত্যেকেই নিজের পছন্দের প্রার্থীর ইতিবাচক দিক তুলে ধরে ভোটারদের সমর্থন আদায়ে সচেষ্ট রয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই উপজেলা নির্বাচনের দামামা বেজে উঠায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে কর্মী সমর্থকদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। রূপসা উপজেলা খুলনা শহরের অত্যন্ত কাছাকাছি হওয়ায় জেলার রাজনীতিতে এই উপজেলার গুরুত্ব অপরিসীম। এই নির্বাচনকে ঘিরে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের একটি বৃহৎ অংশের নেতৃবৃন্দের বিভেদ প্রকাশ্যে রূপ নেওয়ায় বিভিন্ন আলোচনা সমালোচনার মধ্যে নির্বাচনী পরিবেশকে উত্তপ্ত করে তুলেছে। যার প্রভাব নির্বাচন পরবর্তী সময়েও থাকতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সম্পাদকসহ অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ নেতৃবৃন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সরদার হারুনার রশিদের সহোদর উপজেলা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যক্ষ সরদার ফেরদৌস আহম্মেদ কে সমর্থন দিয়ে তার নির্বাচনী পথসভা ও গণসংযোগে অংশগ্রহণ করে আগামী ৫ জুন (কাপ-পিরিচ) মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে উপজেলা বাসির সেবা করার সুযোগ দিতে আহ্বান জানাচ্ছেন। এই নির্বাচনে দলীয়ভাবে মন্ত্রী, এমপিদের স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখার নির্দেশনা থাকলেও সেই নির্দেশনা কে পাস কাটিয়ে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও তার সহধর্মিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম হাবিব কে সমর্থন দিয়ে তাকে বিজয়ী করতে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও তার অনুসারীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। এস এম হাবিব এর নির্বাচনী পথসভা ও গণসংযোগে প্রকাশ্যে এমপির সমর্থিত প্রার্থী বলে দাবি করছেন গণসংযোগে অংশগ্রহণকারী চেয়ারম্যান, মেম্বার ও দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দরা। নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মাঝে তারা বলছেন, এমপি নির্দেশনার বাইরে গেলে এই অঞ্চলে উন্নয়ন ব্যাহত হবে। এজন্য হাবিবের(দোয়াত কলম) মার্কায় ভোট দিয়ে তাকে জয়যুক্ত করুন।

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপে আগামী (৫ই জুন) রূপসা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলাতে ৫টি ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৬ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ৭৭,৬৪৫ জন মহিলা ভোটার ৭৯,৭১১ জন, মোট ভোট কেন্দ্র ৬৫টি বুথ ৪২০টি। এবারের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতীক নির্ভর প্রার্থীরা বিপাকে রয়েছেন। আর এ কারণেই তৃণমূল নেতাকর্মীরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের সাথে যুক্ত হয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছেন। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে এস এম হাবিবের নৈহাটি ও টিএসবি ইউনিয়নে শক্ত অবস্থান রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, এই দুইটিতে হাবিব বেশ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকতে পারেন। এ কারণেই তিনি এখনো পর্যন্ত সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন।অপর তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে ঘাটভোগ ইউনিয়নে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন বাদশা অন্যদের থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। অধ্যক্ষ সরদার ফেরদৌস আহম্মেদ শিক্ষক হওয়ায় উপজেলার প্রতিটি গ্রামে তার ছাত্র-ছাত্রী ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং সুশীল সমাজের একটি বৃহৎ অংশ তাকে ভোট দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আইচগাতী ও শ্রীফলতলা ইউনিয়নে সবার থেকে তিনি শক্ত অবস্থানে রয়েছেন এই দুইটি ইউনিয়নে বেশ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে থাকবেন বলে বিভিন্ন জরিপের মাধ্যমে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে সকল আলোচনা চাপিয়ে যদি প্রয়াত জনপ্রিয় উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আকবর শেখের প্রতি এই অঞ্চলের ভোটারদের আবেগ অনুভূতি শেষ মুহুর্তে বহিঃপ্রকাশ ঘটে। সেক্ষেত্রে ভিন্ন কিছু হলেও হতে পারে। রাজনীতিতে আলী আকবরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত কামরুজ্জামান মোল্লা হতে পারেন আগামীর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে অধ্যক্ষ ফেরদৌস আহম্মেদ, এস এম হাবিব, কামরুজ্জামান মোল্লা প্রত্যেকেই একে অপরের প্রতি অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হলে তাদের বিজয়ের ব্যাপারে তারা প্রত্যেকে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কোহিনুর জাহান বলেন, উপজেলার সকল শ্রেণী পেশার সম্মানিত ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রার্থীদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান, গণমাধ্যম কর্মী সহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক সহযোগিতায় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রূপসা উপজেলা বাসিকে আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধপরিকর।উল্লেখ্য, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি সহ দায়িত্বশীল নেতাদের বিগত উপজেলা নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটকেন্দ্রে পেশি শক্তির ব্যবহার করে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফলাফল পাল্টে দেওয়ার নতুন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরূদ্ধে। বিগত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ভোটের ফলাফল সঠিকভাবে প্রকাশিত হবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ রয়েছে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: BD IT SEBA